These are public posts tagged with #স্থান. You can interact with them if you have an account anywhere in the fediverse.
#বৃটিশ লুটপাটের ছোট্ট একটু ধারণা...
ভারতের সাবেক মন্ত্রী, #রাজনীতিবিদ, জাতিসংঘের সাবেক কূটনৈতিক এবং লেখক শশী থারুর ‘এন এরা অব ডার্কনেস (২০১৬)’ নামে একটি বই লিখেছেন। বইখানা পরে #ব্রিটেন থেকে ‘ইনগ্লোরিয়াস এম্পায়ার—হোয়াট দি ব্রিটিশ ডিড টু #ইন্ডিয়া (২০১৭)’ নামে প্রকাশিত হয়। তাঁর মতে, ভারতবর্ষ শাসনকালে ব্রিটিশরা যা করেছিল তা রীতিমতো দানবীয় অপরাধ। ব্রিটিশরা আসার আগে এখানকার অর্থনীতির আয়তন বিশ্ব অর্থনীতির মোট ২৩ শতাংশ ছিল। ব্রিটিশরা এখান থেকে যাওয়ার সময় যার পরিমাণ ৪ শতাংশে নেমে এসেছিল। ব্রিটিশরা ভারতে আসার আগে বিশ্বের বস্ত্রশিল্পের মোট ২৭ শতাংশ #রপ্তানি হতো ভারত থেকে, যা ব্রিটিশ শাসনের সময়কালে ২ শতাংশে নেমে গিয়েছিল। ব্রিটিশ শাসন আমলে তাদের নীতি প্ররোচিত #দুর্ভিক্ষে প্রায় ১৫ থেকে ২৯ মিলিয়ন ভারতীয় মারা গেছেন।
শশী থারুর আরও লিখেছেন, ব্রিটিশরা উপমহাদেশে রেলের প্রচলন করেছিল তাদের লাভের জন্য। ভারতের লাভের জন্য নয়। ১৮৪৩ সালে গভর্নর জেনারেল লর্ড হার্ডিঞ্জ এবং পরে ১৮৫৩ সালে লর্ড ডালহৌসি এই যুক্তি দেখান যে #ভারতবর্ষকে রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করতে পারলে ভারতে ব্রিটিশ পণ্যের প্রবেশ ও বাজারজাত সহজ হবে। সেই সঙ্গে ভারতবর্ষ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে ব্রিটেনের শিল্পকারখানাগুলোতে পাঠানো যাবে। এই রেললাইন নির্মাণেও ছিল চুরি ও লুণ্ঠন। বার্ষিক ৫ শতাংশ নিশ্চিত লাভে রেললাইন তৈরির প্রকল্পে টাকা খাটিয়ে ব্রিটিশ মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা প্রচুর অর্থের মালিক হন। সেই সময় ভারতে প্রতি মাইল #রেললাইন নির্মাণে খরচ হয়েছিল ১৮ হাজার পাউন্ড। অথচ আমেরিকাতে তখন প্রতি মাইল নির্মাণে খরচ হয়েছিল ২ হাজার পাউন্ড।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া #ইউনিভার্সিটি থেকে গত বছর প্রকাশিত ভারতীয় অর্থনীতিবিদ উষা পাটনায়েকের গবেষণায় দেখা যায় যে ১৭৬৫ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে ব্রিটিশরা আত্মসাৎ করেছে প্রায় ৭৫ ট্রিলিয়ন ডলার। আর এই অর্থ পাচার হয়েছিল বাণিজ্যের আড়ালে। অর্থের এই অঙ্ক বর্তমানে ব্রিটেনের মোট জিডিপির ১৭ গুণ বেশি। ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতীয়দের মাথাপিছু আয় বাড়েনি বরং কমে গিয়েছিল। ১৮৭০ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে ভারতীয়দের গড় আয়ুকাল কমে গিয়েছিল এক–পঞ্চমাংশ।
তারা যখন শোষণের কারণে প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছে তখন খুবই নিষ্ঠুর আচরণ করেছে। লাখ লাখ মানুষ #হত্যা করেছে। আসলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য সৃষ্টি হয়েছিল নিজ দেশ ব্রিটেনকে সমৃদ্ধ করার জন্য। কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নয়। তাই #উপনিবেশ দেশগুলোকে লুণ্ঠন, অত্যাচার, বর্ণবাদ, দাসপ্রথা, নিপীড়ন, শোষণ, #লোভী ও মুনাফাখোর ব্যবসায়ী, ব্যক্তিগত লোভ–লালসা, জাতিগত বিভেদ এসব অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হয়েছে।
আবার শশী থারুরের কথায় ফিরে আসি। তিনি মনে করেন, ব্রিটেনের উপনিবেশবাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য তাদের (ব্রিটেন) #ভারত উপমহাদেশকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। তিনি মূলত কোনো আর্থিক ক্ষতিপূরণের কথা বলেননি। তাঁর দাবি, ব্রিটেনের উচিত তার অতীতের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া। তিনি এটাও মনে করেন, বর্তমান ব্রিটেন তার অতীতের কৃতকর্মের জন্য দায়ী নয়। তাই তাঁর মতে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি বর্তমান ব্রিটেন নীতিগতভাবে মেনে নিলেই যথেষ্ট।
সাম্রাজ্যবাদের জন্য ব্রিটেনের এই ক্ষমা চাওয়ার দাবি অনেক পুরোনো। কিন্তু ব্রিটেন বরাবরই তা উপেক্ষা করে এসেছে। ২০১৩ সালে ব্রিটিশ #প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন অমৃতসার গণহত্যার স্থান পরিদর্শনকালে ব্রিটিশদের হুকুমে হাজারো ভারতীয় হত্যার বিষয়টিকে তিনি লজ্জাজনক ঘটনা বলে অভিহিত করলেও #ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
চ্যান্সেলর থাকাকালে আরেক সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন বলেছিলেন, ব্রিটেনের উপনিবেশবাদের জন্য ক্ষমা চাওয়ার দরকার নেই। বরং ব্রিটেনের উচিত স্বাধীনতা এবং সহনশীলতার বিষয়ে ব্রিটিশ মূল্যবোধের বিষয়টিকে প্রচার করা। আবার অনেকেই বলেন #স্থান, কাল ও পাত্রভেদে সব সাম্রাজ্যবাদের ধরন একই। ব্রিটিশরাও ৪০০ বছর রোমান দ্বারা শাসিত হয়েছে। তাই বলে তারা রোমানদের কাছে এই রকম কিছু দাবি করেনি।
রাশিয়ান #লেখক লিও তলস্তয় একবার মাহাত্মা গান্ধীকে দেওয়া একটি চিঠিতে আমাদের এই উপমহাদেশে ব্রিটিশ উপনিবেশ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, তিনি ভেবে অবাক হন যে কীভাবে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করতে এসে লুটপাট আর শোষণে জড়িয়ে গেল। তিনি আরও লিখেছিলেন, এটি হয়তো সম্ভব হয়েছে মানবতার মধ্যে নিহিত ভালোবাসাকে সম্পূর্ণভাবে হৃদয়ঙ্গম না করার কারণে। হয়তো বিষয়টি সেটাই। খোদ ব্রিটেনের #তৎকালীন সাধারণ জনগণ বা এখনকার সাধারণ জনগণ উপনিবেশবাদের সঠিক ইতিহাস জানলে বিষয়টি হয়তো সানন্দে গ্রহণ করবে না।
(-২১ সালে প্রকাশিত একটি আর্টিকেল হতে সংগৃহীত।)
নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:
#Bangladesh #Bangla #Bengali #Dhaka #Bangladeshi #Kolkata
#বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী #কলকাতা