প্রায় ৭০০ বছর ফারসি ছিলো বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা।
বাংলা কোনো কালেই এই অঞ্চলের #রাষ্ট্রভাষা ছিলোনা। #বৌদ্ধ আমলে পালি, #হিন্দু #সেন আমলে #সংস্কৃত, #মুসলমান আমলে #ফারসি এবং #ইংরেজ #আমলে #ইংরেজি ছিলো রাষ্ট্রভাষা। প্রায় ৭০০ বছর ফারসি ছিলো বাংলাদেশের #রাষ্ট্রভাষা।
কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে বাংলাদেশের মানুষের #মাতৃভাষা কেউ কেড়ে নেয়নি এবং সেটা সম্ভবও ছিলোনা।
#মুহাম্মদ #আলী #জিন্নাহ পাকিস্তানের #গভর্নর হিশেবে ১৯ মার্চ ১৯৪৮ সালে পূর্ব #বাংলায় আসেন ১০ দিনের সফরে।
রেসকোর্স ময়দান এই অঞ্চলের জাতীয় ভাষার/প্রাদেশিক ভাষার প্রশ্নে তিনি বলেন:
Whether Bengali shall be the #official #language of this province is a matter for the elected representatives of the people of this province to decide. I have no doubt that this question shall be decided solely in accordance with the wishes of the inhabitants of this province at the appropriate time. ... People of this province to decide what shall be the language of your province. *(1)
অর্থাৎ, এই অঞ্চলের আন্ত-প্রাদেশিক #ভাষা কী হবে তা এই অঞ্চলের #জনগণ ভোটের মাধ্যমে নির্ধারণ করবে। একই কথা তিনি বলেন #ঢাকা #বিশ্ববিদ্যালয়ের #সমাবর্তন অনুষ্ঠানেও।
এরই প্রেক্ষাপটে খাজা #নাজিমউদ্দীন পরিষদে বাংলাকে পূর্ব বাংলার সরকারি ভাষা হিশেবে পাস করিয়ে আইনগত ভিত্তি দেন ৬ এপ্রিল ১৯৪৮ সালে। এই আইন যখন পাস হয় তখনও পশ্চিম বাংলায় বাংলা সরকারি ভাষা হিশেবে মর্যাদা পায়নি। অর্থাৎ, বাংলা ভাষা প্রথমবারের মতো এই অঞ্চলের #জাতীয় ভাষা/প্রাদেশিক ভাষার মর্যাদা পায় পাকিস্তান আমলে!
কিন্তু, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে জিন্নাহর মত ছিলো উর্দুর পক্ষে। অনেকেই মনে করেন, জিন্নাহর #মাতৃভাষা বুঝি উর্দু ছিলো। আদতে জিন্নাহর মাতৃভাষা ছিলো মহাত্মা গান্ধীর মতো- #গুজরাটি। এমনকি তিনি উর্দু #ভাষা জানতেনও না। তার কাজকর্মের ভাষা ছিলো ইংরেজি।
‘Urdu and only Urdu shall be the state language of Pakistan’ বলে তিনি যেই বক্তৃতা দিয়েছিলেন সেটি পর্যন্ত ইংরেজিতে দিয়েছিলেন, উর্দুতে নয়।
জাতীয় স্বার্থে গুজরাটিভাষী হয়েও #গান্ধী যেমন চেয়েছিলেন ভারতের রাষ্ট্রভাষা হিশেবে #হিন্দিকে, তেমনি জিন্নাহও চেয়েছিলেন #উর্দুকে।
বাংলা ভাষা যে অভিবক্ত #ভারত কিংবা #পাকিস্তানের #রাষ্ট্রভাষা হতে পারে, সেটা কেউ দুঃস্বপ্নেও হয়তো ভাবেনি। অভিবক্ত ভারতের রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে বিতর্ক ছিলো- #উর্দু নাকি #হিন্দি, কোনটি হবে ভারতের #রাষ্ট্রভাষা?
‘#বাংলার #বাঘ’ হিশেবে পরিচিত শেরে বাংলা এ. কে. #ফজলুল #হক মনে করতেন উর্দু হচ্ছে ভারতীয় মুসলমানদের স্বভাবজাত ভাষা। ১৯৩৮ সালের ১ অক্টোবর কলকাতায় অনুষ্ঠিত #নিখিল #ভারত মুসলিম শিক্ষা সম্মেলনে বাংলার প্রধানমন্ত্রী হিশেবে সভাপতির ভাষণে তিনি হিন্দির পরিবর্তে উর্দুকে ভারতের সাধারণ ভাষা (লিংগুয়া ফ্রাঙ্কা) রূপে গ্রহণের প্রস্তাব করেন। *(2)
বাংলাদেশের খাঁটি বাঙ্গালি হয়েও #ফজলুল হক বিয়ে করেছিলেন #অভিজাত উর্দু পরিবারে, সেই হিশেবে তার ঘরের ভাষা ছিলো #উর্দু। তিনি নিজেও স্বচ্ছন্দ্যে উর্দু বলতে পারতেন। #মাওলানা #ভাসানী এবং #শেখ #মুজিবুর রহমানও বেশ ভালো #উর্দু বলতে পারতেন।
যেই জিন্নাহর মৃত্যুতে শেখ মুজিবুর রহমান #হাউমাউ করে কেঁদেছিলেন *(3) সেই জিন্নাহকে বাঙ্গালী পারলে #কবর থেকে তুলে এনে #ফাঁসিতে ঝুলায়! বাঙ্গালীর কাছে জিন্নাহ ‘অপরাধী’ হয়ে আছেন কেবল ‘Urdu and only Urdu shall be the state language of Pakistan’ এই কথাটির জন্য।
অথচ রবীন্দ্রনাথেরা প্রায় একই কথা (Hindi is the only possible national language for inter-provincial intercourse in India) বলা স্বত্তেও তারা #বেখসুর #খালাস পেয়ে যান; এমনকি তারা আবির্ভূত হন বাংলা ভাষার ‘#পয়গম্বর’ হিশেবে!
1. Quaid-i-Azam Mahomed Ali Jinnah Speeches, as governor general of Pakistan 1947-1948. Karachi: Pakistan Publication.
2.বাংলাদেশের ইতিহাস, চতুর্থ খণ্ড, রমেশচন্দ্র মজুমদার।
3. আহমদ ছফার সাক্ষাৎকার, বাংলাবাজার পত্রিকা, ৩১ জানুয়ারি - ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৯।
নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:
#Bangladesh #Bangla #Bengali #Dhaka #Bangladeshi #BD
#বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী
@shakil_prof @bengali_convo @masindia রেফারেন্স বই গুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
@Bangladesh @bengali_convo @masindia সব ঠিখ কোথা বলেছেন। উর্দূ বনাম বাংলা কখনও সূত্র ছিল না। পাকিস্তান সরকারের অত্যাচার এবং যুলমবাদী এই বিপ্লব তৈরি করে। বদরুদ্দীন উমর এই নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছে