Bangladesh :verified:

পুরানো কলকাতার পতিতাপল্লী

বস্তুতঃ সেই যুগ শেষ হয়ে গিয়েছে যে যুগের মানুষেরা পতিতাদের #ঘৃণা করতেন। এমনকি নারীদের মধ্যে যাঁরা #নাট্যশিল্পী ছিলেন, তাঁদেরও তাঁরা বিরূপ দৃষ্টিতে দেখতেন। #ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, বঙ্গদেশের রঙ্গালয়ের প্রথম অবস্থায় ভদ্রপরিবারের মহিলারা থিয়েটার দেখতে যেতেন না, যেহেতু তাতে বারাঙ্গনারা অভিনয়ে অংশগ্রহণ করতেন। ‘গিরিশচন্দ্র ঘোষ’ই ভদ্রপরিবারের মহিলাদের মন থেকে সেই সঙ্কোচটা দূর করেছিলেন। তিনি থিয়েটারের দ্বিতলে

‘চিক’-এর আড়ালে মহিলাদের জন্য #স্বতন্ত্র আসনের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু বর্তমান সময়ের সমাজ ও সমাজপতিদের কাছে পতিতারা ঘৃণিত জীব নয়। বর্তমান সমাজে তাঁরাও মর্যাদাসম্পন্ন এক শ্রেণী। তাঁরাও ‘মায়ের জাত’, তবে ‘পদস্খলিতা’ মাত্র। তাঁরাও তো সমাজের একটা অভাব পূরণ করেন। একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারা যাবে যে এক শ্রেণীর নারীরা যদি সেই পথে না যেতেন, তাহলে সমাজে কি বিশৃঙ্খলাই না প্রকাশ পেত, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে, যেখানে আজও পুরুষের অনুপাতে নারীর সংখ্যা বেশ কম। এমনকি বর্তমান সময়ের জনগণনার হিসেবেও সারা ভারতে #পুরুষ ও নারীর অনুপাত সমান নয়। এখানে উল্লেখ্য যে, প্রাচীন ভারতে কিন্তু বারাঙ্গনাদের অন্য দৃষ্টিতে দেখা হত। রাজসভায় ও উৎসব-অনুষ্ঠানে তাঁদের জন্য মর্যাদামণ্ডিত আসন সংরক্ষণ করা হত।

কলকাতায় পতিতাদের #আগমন ঠিক কবে ঘটেছিল, ঐতিহাসিকদের কাছে সেটা আজও অজানা। তবে এই বিষয়ে সবচেয়ে #প্রাচীন যে নজির পাওয়া যায়, তা হল খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যাহ্নের। সম্ভবতঃ সেই সময় থেকেই কলকাতা শহরে, #পতিতাপল্লী বেশ জাঁকালো ভাবে গড়ে উঠেছিল। কেননা, ১৭৫৯ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি তারিখের ‘ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি’র ‘কনসালটেশনস্’ বই থেকে জানা যায় যে, #কোম্পানি - ‘ঈশ্বরী’ ও ‘ভবী’ - নামে দু’জন বারবনিতার মাল নিলামে #বিক্রি করেছিল। তবে ওই তারিখের আগেই যে কলকাতা শহরে #বেশ্যাপল্লী ছিল, সেটা জানা যায়, ‘সিরাজ’ কর্তৃক #কলকাতা আক্রমণের সময় (১৭৫৬) যে সব বিষয় সম্পত্তি নষ্ট হয়েছিল এবং যে সব সম্পত্তির জন্য ‘ #মীরজাফর’ কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছিলেন, সেগুলোর নামের তালিকা থেকে। ঐতিহাসিকেরা ক্ষতিপূরণের সেই বণ্টন তালিকায় - ‘রতন’, ‘ললিতা’ ও ‘মতিবেওয়া’ নামে ‘গোবিন্দরাম মিত্রের’ আশ্রিতা #তিনজন গণিকার নাম পেয়েছিলেন। ‘জেমস লঙ’ সাহেব লিখে গিয়েছিলেন যে, ১৭৮০ সাল নাগাদ, #ইউরোপীয় জাহাজসমূহের নাবিকেরা, ‘চিৎপুর’ অঞ্চলের বেশ্যাপল্লীতে আনাগোনা করতেন। পরবর্তীকালে ‘চিৎপুর’ ‘গরাণহাটা’র বেশ্যাপল্লীহ ‘ #সোনাগাজী’ (পরে ‘সোনাগাছি’) নামে #প্রসিদ্ধ হয়েছিল। ‘সোনাগাজী’র উল্লেখ প্রথম পাওয়া যায়, ‘প্যারীচাঁদ মিত্র’ লিখিত ‘আলালের ঘরের দুলাল’ গ্রন্থে। কিন্তু তার অনেক আগের সাহিত্যেও কলকাতার বারবনিতাদের উল্লেখ পাওয়া যায়। ‘ভবানীচরণ #বন্দ্যোপাধ্যায়’ লিখিত গ্রন্থসমূহে পুরানো কলকাতার বারবনিতাদের উল্লেখ রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ‘বেশ্যাপ্রধানা’ ছিলেন - ‘বকনাপিয়ারী’। ‘ভবাণীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের’ রচনার অব্যবহিত পরেই ‘কৃষ্ণরাম বসু স্ট্রীটে’ (শ্যামবাজার ট্রাম ডিপোর পেছনে) ‘নবীনচন্দ্র বসু’র বাড়িতে ‘বিদ্যাসুন্দর’ নাটকের অভিনয় হয়েছিল। সেই নাটকে - ‘বিদ্যা’র ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, ষোড়শবর্ষীয়া ‘রাধামণি’ বা ‘মণি’, ‘রানী’ ও ‘মালিনী’র ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন - প্রৌঢ়া ‘জয়দুর্গা’ ও বিদ্যার সহচরীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন - ‘রাজকুমারী’ বা ‘রাজু’। তাঁদের সকলেকেই ‘বরানগরের পতিতাপল্লী’ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। বরানগরের প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, অষ্টাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকের কলকাতায়, এক #অবৈধ বণিক বা ‘ইন্টারলোপার’ এসেছিলেন। তাঁর নাম ছিল - ‘আলেকজাণ্ডার #হ্যামিল্টন’। হ্যামিল্টনের #ভ্রমণ-বৃত্তান্ত থেকে জানতে পারা যায় যে, তাঁর সময়ে, বেশ্যাদের প্রশিক্ষণ দেবার জন্য, বরানগরে একটি বিদ্যায়তন বা ‘সেমিনারি’ ছিল।

তবে কলকাতা শহরের মধ্যে ‘সোনাগাজী’ই ছিল সবচেয়ে #প্রসিদ্ধ বেশ্যাপল্লী। অষ্টাদশ শতাব্দীর কলকাতায়, ‘সোনাগাজী’ বলতে - ‘গরাণহাটা’, ‘দুর্গাচরণ মিত্র স্ট্রীট’, ‘মসজিদ বাড়ি স্ট্রীট’, ‘চিৎপুর রোডের ইমামবকস্ খালাতশ লেন’ ইত্যাদি অঞ্চলকেই বোঝাত। এছাড়া, #বেশ্যাপল্লী ছিল ‘রামবাগানের’ ‘মিনার্ভা থিয়েটারের’ আশেপাশেও। আরও বেশ্যাপল্লী ছিল - ‘শোভাবাজারের রাজবাড়ি’র পিছনে ‘ফুলবাগানে’, ‘শ্যামবাজার ট্রাম ডিপো’র সামনে ও ‘কালাচাঁদ সান্যাল লেনে’, ‘হরলাল মিত্র স্ট্রীটের’ শেষপ্রান্তে ‘বাগবাজারের খালের মুখে’, ‘উল্টোডাঙ্গা’য়, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সামনে ‘হাড়কাটা গলি’তে বা ‘প্রেমচাঁদ বড়াল স্ট্রীটে’, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের দক্ষিণে ‘ছানাপট্টি’র পিছনের সরু গলিটার ভিতরে, ‘শ্যামবাজারের’ ‘কম্-বলিটোলা’য়, ‘গ্রে স্ট্রীট’ প্রভৃতি জায়গায়৷ তবে তৎকালীন কলকাতায় এমন একটি #বেশ্যাপল্লী ছিল, যেখানে ভারতের সব প্রদেশেরই, বিশেষ করে উড়িষ্যার বেশ্যারাই বাস করতেন। সেটা ছিল - ‘ধুকুরিয়া #বাগান’, ‘জানবাজারের’ রানী রাসমণির বাড়ির কাছে ‘রামহরি মিস্ত্রি লেন’ ও ‘উমা দাস লেনে’। এছাড়া তখনকার কলকাতা শহরের আরও নানা জায়গায় বেশ্যারা ছড়িয়ে ছিলেন, যেমন - ‘বালাখানা’, ‘গৌরীবেড়’, ‘জানবাজার’ ইত্যাদি জায়গায়৷ ‘কালীঘাট’ ও ‘চেতলা’ও বেশ্যাদের পীঠস্থান ছিল। কালীঘাটের বেশ্যাদের কথা প্রথম জানতে পারা যায়, জনৈকা #ইংরেজ মহিলা মিসেস ‘এলিজা ফে’-র বিলাতে এক বান্ধবীর কাছে লিখিত পত্র থেকে।

এখানে অবশ্য উল্লেখ্য যে, সেকালের ‘বটতলা’র সাহিত্য সংস্থাগুলি গড়ে উঠেছিল, সোনাগাছির বেশ্যাপল্লীরই আশেপাশে। এখানে আরও বলা দরকার যে, তৎকালীন কলকাতার রঙ্গালয় ও #অভিনয় কলার প্রথম অধ্যায় রচিত হয়েছিল কলকাতা শহরের বারবণিতাদের নিয়ে। বস্তুতঃ সে যুগের নামজাদা অভিনেত্রীদের মধ্যে যাঁরা যশস্বিনী হয়েছিলেন, তাঁরা সকলেই পতিতাপল্লীর অধিবাসিনী ছিলেন। যথা - ‘ক্ষেত্রমণি’, ‘কাদম্বিনী’, ‘যাদুমণি’, ‘হরিদাসী’, ‘রাজকুমারী’, ‘বিনোদিনী’, ‘নারায়ণী’, ‘তারাসুন্দরী’, ‘আঙুরবালা’, ‘আশ্চর্যময়ী’ প্রমুখ। তাঁদের সকলকেই রূপজীবিকা মহল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। ১৮৮৩ থেকে ১৮৮৫ সালের মধ্যে তাঁদের অভিনয় দেখে চমকিত হয়েছিলেন ‘রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব’ ও ১৯২২ সালে স্বয়ং ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’। এরপরে বঙ্গীয় রঙ্গমঞ্চের ইতিহাস থেকে সেই সব রূপজীবিরা অন্তর্হিত হয়েছিলেন #বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকে, যখন ‘শিশিরকুমার ভাদুড়ি’র সঙ্গে নাটকে #অভিনয় করতে শুরু করেছিলেন শিক্ষিতা মহিলারা।

বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকের গোড়ায় ‘লীগ অফ নেশনস্’-এর একটি সমীক্ষা #দল যখন #পতিতাবৃত্তি সম্বন্ধে সরজমিনে #তদন্ত করবার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন, তখন তাঁরা দেখেছিলেন যে, ‘পার্ক সার্কাস’ অঞ্চলে ‘সোভিয়েতদেশীয়’ বারাঙ্গনারা কেন্দ্রীভূত হয়ে খুব জাঁকালো রকমের বেশ্যাবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছেন। তখন ‘অ্যাংলো-#ইণ্ডিয়ান’ বারাঙ্গনারা ‘ফ্রী স্কুল ষ্ট্রীট’ অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত হয়েছিলেন, আর ‘ইউরোপীয়’ বারাঙ্গনারা কেন্দ্রীভূত হয়েছিলেন ‘পার্ক ষ্ট্রীট’ অঞ্চলে। ঊনবিংশ শতাব্দীর দুই মহাপুরুষ - ‘শিবনাথ শাস্ত্রী’ ও ‘ #ঈশ্বরচন্দ্র #বিদ্যাসাগর’- পতিতাদের দুর্দশায় অত্যন্ত কাতর হয়ে পড়েছিলেন। কথিত আছে যে, #বিদ্যাসাগর একদিন শীতের রাত্রে পথের ধারে কনকনে শীতের মধ্যে বারবনিতাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, চাদরের খুঁট থেকে অনেকগুলো #নোট বের করে তাঁদের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বলেছিলেন - “ #মা লক্ষ্মীরা, তোমরা ঠাণ্ডায় দাঁড়িয়ে থেকো না, অসুখ করবে, যাও, ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়।”

(তথ্যসূত্র:

১- History of Prostitution in India, S. N. Sinha & Nripendra Kumer Basu.

২- Prostitution In India, Santosh Kumar Mukerji.

৩- ৩০০ বছরের কলকাতার পটভূমি ও ইতিকথা, ডঃ অতুল সুর।)

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:
#Bangladesh #Bangla #Bengali #Dhaka #Bangladeshi #Kolkata
#বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী #কলকাতা

Bangladesh :verified:

"ছবির ছেলেটাকে চেনেন? মাঝখানের জনকে?

বলতে গেলে ঢাকার সবচেয়ে বড় লোক পরিবারের ছেলে ছিল।

তখনকার দিনে যখন ১ম শ্রেণীর অফিসারের বেতন ছিল খুব বেশি হলে ৫০০-৬০০ টাকা, সে এলভিস প্রিসলির গান শোনার জন্য এক ধাক্কায় ১০০০ টাকার রেকর্ড কিনে আনতো। তাদের বাড়িতে হরিণ ছিল, সরোবরে সাঁতার কাটত ধবল রাজহাঁস, মশলার #বাগান থেকে ভেসে আসত দারুচিনির গন্ধ(ডাকে পাখি খোলো আঁখি, এই গানটার #শুটিং হয়েছিল তাদের বাড়িতে)।
জ্বী হ্যা, আমি #মাগফার #উদ্দিন #চৌধুরী #আজাদ এর কথা বলছি।
আজাদ ক্লাস সিক্সে পড়ে, সেন্ট গ্রেগরি। ১৯৬০ এর দশক। আজাদের বাবা আরেকটা বিয়ে করবেন। আজাদের মা বললেন, তুমি #বিয়ে করবে না, যদি করো, আমি একমাত্র ছেলে আজাদকে নিয়ে #বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাব। আজাদের #বাবা আরেকটা #বিয়ে করলে আজাদের মা সাফিয়া তার বালকপুতের হাত ধরে ওই #রাজপ্রাসাদ #পরিত্যাগ করেন এবং একটা পর্ণকুটীরে #আশ্রয় নেন। ছেলেকে #লেখাপড়া শেখান। #আজাদ ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের #আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে #মাস্টার্স পাস করে।
তার বন্ধুরা যোগ দিয়েছে #মুক্তিযুদ্ধে, ফিরে এসেছে আগরতলা থেকে, ট্রেনিং নিয়ে। তার ঢাকায় গেরিলা অপারেশন করে। বন্ধুরা আজাদকে বলল, চল, আমাদের সাথে, অপারেশন করবি। তুই তো #বন্দুক #পিস্তল চালাতে জানিস। তোর আব্বার তো #বন্দুক আছে, পিস্তল আছে, তুই সেগুলো দিয়ে অনেকবার শিকার করেছিস।
#আজাদ বলল, এই জগতে মা ছাড়া আমার কেউ নেই, আর মায়েরও আমি ছাড়া আর কেউ নেই। মা অনুমতি দিলেই কেবল আমি #যুদ্ধে যেতে পারি।
মাকে #আজাদ বলল, মা, আমি কি যুদ্ধে যেতে পারি?
মা বললেন, নিশ্চয়ই, তোমাকে আমার প্রয়োজনের জন্য মানুষ করিনি, #দেশ ও দশের জন্যই তোমাকে মানুষ করা হয়েছে।
আজাদ যুদ্ধে গেল।
দুটো #অপারেশনে অংশ নিল। তাদের বাড়িতে অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হলো। গেরিলারা #আশ্রয় নিল।
১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট। ধরা পড়ে ক্র্যাক প্লাটুনের একদল #সাহসী #মুক্তিযোদ্ধা। সেসময় আজাদকেও আটক করা হয়। তাকে ধরে নিয়ে রাখা হলো রমনা থানা সংলগ্ন ড্রাম #ফ্যাক্টরি সংলগ্ন এম.পি হোস্টেলের মিলিটারি টর্চার সেলে।
গরাদের ওপারে দাড়িয়ে থাকা আজাদকে তার মা চিনতে পারেন না। #প্রচণ্ড মারের চোটে চোখমুখ ফুলে গেছে, ঠোঁট কেটে ঝুলছে, ভুরুর কাছটা কেটে গভীর গর্ত হয়ে গেছে।
–“মা, কি করব? এরা তো খুব মারে। স্বীকার করতে বলে সব। সবার নাম বলতে বলে।“
–“বাবা, তুমি কারোর নাম বলোনি তো?
–না মা, বলি নাই। কিন্তু ভয় লাগে, যদি আরও মারে, যদি বলে দেই…
–বাবারে, যখন মারবে, তুমি শক্ত হয়ে থেকো। সহ্য করো। কারো নাম বলো না।
–আচ্ছা মা। ভাত খেতে ইচ্ছে করে। দুইদিন #ভাত খাই না। কালকে ভাত দিয়েছিল, আমি ভাগে পাই নাই।
–আচ্ছা, কালকে যখন আসব, তোমার জন্য ভাত নিয়ে আসব।
সাফিয়া বেগমের ভেতরটা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। গায়ে হাত তোলা তো দূরে থাক, ছেলের গায়ে একটা ফুলের টোকা লাগতে দেননি কোনোদিন। সেই ছেলেকে ওরা এভাবে মেরেছে… এভাবে…
মুরগির #মাংস, ভাত, আলুভর্তা আর বেগুনভাজি টিফিন ক্যারিয়ারে ভরে পরদিন সারারাত রমনা থানায় দাড়িয়ে থাকেন #সাফিয়া বেগম, কিন্তু আজাদকে আর দেখতে পাননি। তেজগাঁও থানা, এমপি হোস্টেল, ক্যান্টনমেন্ট-সব জায়গায় খুজলেন, হাতে তখন টিফিন ক্যারিয়ার ধরা, কিন্তু আজাদকে আর খুঁজে পেলেন না।
#ছেলে একবেলা #ভাত খেতে চেয়েছিলেন। মা পারেননি ছেলের মুখে ভাত তুলে দিতে। সেই কষ্ট-যাতনা থেকে পুরো ১৪টি #বছর ভাত মুখে তুলেন নি মা! তিনি অপেক্ষায় ছিলেন ১৪ টা বছর ছেলেকে ভাত খাওয়াবেন বলে। বিশ্বাস ছিলো তাঁর আজাদ ফিরবে। ছেলের অপেক্ষায় শুধু ভাতই নয়, ১৪বছর তিনি কোন বিছানায় শোন নি। শানের মেঝেতে শুয়েছেন #শীত #গ্রীষ্ম কোন কিছুতেই তিনি পাল্টান নি তার এই পাষাণ শয্যা। আর এর মুল কারণ আজাদ রমনা থানায় আটককালে বিছানা পায়নি।
#প্রজন্ম কিংবদন্তি আজাদদের চিনেনা, চিনে হলিউডের অ্যাকশন #চলচ্চিত্র
ভালো থাকুক জীবনের প্রেমগুলো। ভালো থেকো #কিংবদন্তী।"

[লেখাটি প্রিয় লেখক 'আনিসুল হক' এর "মা" বই থেকে নেওয়া হয়েছে।]

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:
#Bangladesh #Bangla #Bengali #Dhaka #Bangladeshi #BD
#বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী