Show newer

ভালো যদি বাসতেই হয় এমনিভাবে বাসো!

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

যেহেতু, সুভাষচন্দ্র বসু গান্ধীকে পছন্দ করেন নি, তাই ভারতীয় স্বাধীনতায় তাঁর ভূমিকা ইতিহাসের পৃষ্ঠা থেকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলা হয়েছে। এটা কত টুকু সত্য?

যদি এত জনপ্রিয় ছিলেন এবং সকলেই তাঁর পক্ষে ছিলেন, তবে সুভাষচন্দ্র বসুর বিরুদ্ধে গান্ধীর প্রার্থী পট্টভী সীতারামাইয়া কেন ১৯৩৮ সালের কংগ্রেস নির্বাচনে বোসের কাছে হেরেছিলেন?

দ্বিতীয় শুরু হওয়ার পরে, অনেক নেতা মহাত্মা গান্ধীকে সেই সময় বিদ্রোহ শুরু করতে বলেছিলেন কারণ ব্রিটিশরা তখনকার সময়ে খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে ছিল এবং তাদের কাছ থেকে সহজেই স্বাধীনতা অর্জন করা সহজ হবে তবে he refused stating this।

“We will not revolt against the Britishers as they are vulnerable as we should not raise our voices against a power who is weak right now!”

তার উদ্দেশ্য আসলে কী তা আমি এখনও বুঝতে পারি নি। তবে শক্তিশালী নিজের মত করে লিখেছিল যা এখন অনেক ভারতীয়ের কাছে খুব কলঙ্কিতভাবে পরিচিত।

তদ্ব্যতীত, যখন ক্লিমেন্ট অ্যাটলিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যিনি ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন, তিনি উত্তর দিয়েছিলেন।

"সুভাষচন্দ্র বসু এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। গান্ধীর ভূমিকা ছিল ন্যূনতম!"

যেহেতু, গান্ধীকে পছন্দ করেন নি, তাই ভারতীয় স্বাধীনতায় তাঁর ভূমিকা ইতিহাসের পৃষ্ঠা থেকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলা হয়েছে।

যদি এত জনপ্রিয় ছিলেন এবং সকলেই তাঁর পক্ষে ছিলেন, তবে সুভাষচন্দ্র বসুর বিরুদ্ধে গান্ধীর প্রার্থী পট্টভী সীতারামাইয়া কেন ১৯৩৮ সালের কংগ্রেস নির্বাচনে বোসের কাছে হেরেছিলেন?

@arinbasu
@arinbasu1
@BengaleeBabu @BengaliBabuspeaketh
@iambengaleebabu

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

যশোরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ট্যাংক।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিলম্বিত না হওয়ার পেছনে ট্যাংকের blitzkrieg এর অবদান এক কথায় অনস্বীকার্য।

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানিদের হাত থেকে জব্দ করা অস্ত্রের সাথে বাঙালি সরকারি কর্মকর্তা ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স।

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

পুরনো ব্রহ্মপুত্র পেরিয়ে একটা রেললাইন উড়িয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমাদের। বাহাদুরবাদ ঘাটের শক্তিশালী পাকিস্তানি শিবিরে সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। পাড়ি দেবার আগে নদীর পাড়ে দল বেঁধে জটলা করছিলো সবাই। হঠাৎ মনে হল, একটা ছবি তুলে রাখি। ছবিতে আখতার, আবু সাঈদ, বাছেদ, ফারুকসহ অনেকেই। বাকিদের মনে করতে পারছি না।

-মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব। ছবিটাও তিনিই তুলেছেন।

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

বাস্তবতা আজ প্রতিকূলতার কাছে হার মেনে নিয়েছে।😢😢😢

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

কাতারের প্রকল্পে ইসরাইলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে আটক ৮ প্রাক্তন সদস্যের হবার সম্ভাবনা।

৮ জন ভারতীয়ের একটি চক্র ধরা পরার পরে কাতার ৭৫ জন ভারতীয় প্রকৌশলীকে বরখাস্ত করেছে এবং তাদেরকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। এদের বেশিরভাগই ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন যারা কাতারে একটি সাবমেরিন প্রকল্পে কাজ করছিল।

কাতারী সাবমেরিন প্রকল্পে গুপ্তচরবৃত্তির সাথে জড়িত ভারতীয় কোম্পানি "দাহরা গ্লোবাল"-কে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই কোম্পানি ৮ প্রাক্তন নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়োগ করেছিল যারা পরে ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কাতার দ্বারা গ্রেপ্তার হয়।

ভারতীয় সংস্থা দাবি করেছে যে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা কাতারকে সরবরাহ করা তথ্য গ্রেপ্তারের কারণ হতে পারে।

যারা অভিযুক্ত:-

ক্যাপ্টেন নভতেজ সিং গিল
ক্যাপ্টেন বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা
ক্যাপ্টেন সৌরভ বশিষ্ঠ
কমোডোর অমিত নাগপাল
কমোডোর পূর্ণেন্দু তিওয়ারি
কমোডোর সুগুনাকর পাকালা
কমোডোর সঞ্জীব গুপ্ত
নাবিক রাগেশ

তথ্যসূত্রঃ
theprint.in/defence/families-o

aljazeera.com/news/2023/5/2/in

dohanews.co/qatar-shuts-down-s

tribuneindia.com/news/nation/8

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

দেশে পেট্রোল মজুদ আছে ১৩ দিনের, অকটেন ১১ দিনের— এই শিরোনামে দ্য ডেইলি স্টার বাংলা এক প্রতিবেদন প্রকাশ করার কিছুক্ষণ পর সরিয়ে ফেলছে।

এক প্রতিবেদনে লিখেছে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এর কাছে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে। জাপানের কাছে ঋণ চেয়েছে ১ বিলিয়ন ডলার।

কার্ব মার্কেটে আজকে প্রতি ডলারের জন্য গুণতে হয়েছে ১১৪ টাকা। দেশের ব্যাংকগুলোকে খাতে ২৫ শতাংশ ও জ্বালানি খাতে ২০ শতাংশ ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এইতো মাত্র এক সপ্তাহে আগে চট্টগ্রামের ইউরিয়া সার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের সবচেয়ে বড়ে ইউরিয়া সারকারখনা জামালপুরের যমুনায়ও বন্ধ হওয়ার পথে।

গত দুই মাসে আড়ং এর দুধের দাম বেড়েছে লিটার প্রতি ১৫ টাকা। প্রতি ২ লিটার পানির বোতলে বেড়েছে ৫ টাকা। এছাড়া তেল, সাবানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ১০ শতাংশ থেকে শুরু করে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। কোন কোন পণ্যের দাম পূর্বের মূল্যের দিগুণ হয়েছে। ইলেকট্রনিক দাম বেড়েছে দিগুণ। লোডশেডিং-এর এক সপ্তাহের মধ্যে ফ্যানের দাম দিগুণ হয়ে গেছে।

বাংলা রেস্তোরাঁগুলোতে আগে যে পরোটা, রুটির দাম ছিলো ৫ টাকা তা এখন ১০ টাকায় খেতে হচ্ছে। টাকা এখন কাগজ হওয়ার পথে। তাই নয় কী!

একাধিক মেগা প্রকল্পের খরচ বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি। গত কয়েক বছরে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে আকাশচুম্বী। দুর্নীতি আর বিদেশে অর্থ পাচার হয়েছে কয়েক হাজার কোটি । ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বার্ষিক নিট বিদেশি ঋণ গ্রহণের (গৃহীত ঋণ থেকে পরিশোধ বাদ দিয়ে) পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে ২০ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ কোটি টাকা। ঋণ গ্রহণের পরিমাণ ২০ গুণ বাড়লেও পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে মাত্র দ্বিগুণ। অর্থাৎ প্রতিবছর বছর বিশাল অঙ্কের ঋণের বোঝা দেশের অর্থনীতির ওপর চাপছে। মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের জন্য ১৪০ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেয়া হয়েছে।

এই মেগা প্রকল্পের জন্য নেয়া বৈদেশিক ঋণের বেশির ভাগের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হবে আগামী বছরের মাঝামাঝিতে। তারপর থেকে কিস্তিতে বিশাল অংকের টাকা সুদসহ প্রতি বছর পরিশোধ করতে হবে। শুধু রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের জন্যই কেবল ২০২৩ সাল থেকে বছরে ৫৬৫ মিলিয়ন ডলার সুদ (মূল ঋণ বাদে) দিতে হবে।

এই মুহূর্তে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ আছে ৩৯ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলে (ইডিএফ) বিনিয়োগ করা সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে থাকে ৩২ বিলিয়ন ডলার সামথিং। এই রিজার্ভ মুদ্রা দিয়ে আমদানি ব্যয় মিটানো যাবে ৪-৫ মাসের।

স্টার করে আবার সরিয়ে ফেলে, প্রথম আলো এসব বুঝেও এড়িয়ে যায়, অন্যেরা সাহস পায় না প্রতিবেদন ছাপাতে। এভাবে আর কতদিন লুকোচুরি চলবে?

এড়িয়ে গেলে যাক, যাঁরা এসব বুঝেন, জানেন। তারা লেখালেখি করেন। অন্যেকে জানান দেশের বর্তমান অবস্থা। এ আমাদের প্রত্যকের। শ্রীলঙ্কা হলে আমাদের ভোগতে হবে, আবার সিঙ্গাপুর হলেও আমরাই আরামে থাকবো!

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

কিছু মানুষের বক্তব্য ভারত পাশে না থাকলেও, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করতে পারতো। এর কতটুকু যুক্তি আছে?
ধৈর্য ধরে পুরোটা লেখা পড়ার জন্যে অগ্রিম ধন্যবাদ। এই বিতর্কিত বিষয়টা নিয়ে আমার সীমিত জ্ঞানের পুরোটা দিয়েই একটা উত্তর লেখার ইচ্ছা ছিল অনেকদিন থেকেই। কথা না বাড়িয়ে আসল উত্তরে আসি।

প্রথমেই একটা ব্যাপার বোঝা বেশ জরুরি। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাহায্য দুই ধরনের হতে পারত-

১)মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র, গোলাবারুদ সরবরাহ এবং শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদান, বিশ্ব মিডিয়াতে যুদ্ধের প্রচারণা।

২)সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ। ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রেরণের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করা।

এ দু ধরনের সাহায্যের মধ্যে ১ নং সাহায্যটি ছাড়া বাংলাদেশ কখনোই স্বাধীন হতে পারত না। কখনোই না!

এবং ২ নং সাহায্য ছাড়া বাংলাদেশ অবশ্যই স্বাধীন হতে পারত।

এ ব্যাপারটা বোঝার জন্যে প্রথম থেকে নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করা জরুরি।

২৬শে মার্চ ১৯৭১

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবি চিরতরে নিভিয়ে দিতে ১০ হাজার সৈন্য নিয়ে শুরু করে অপারেশন সার্চলাইট।

Operation Searchlight - Wikipedia: en.wikipedia.org/wiki/Operatio

ঢাকায় শুরু হয় এক অভূতপূর্ব গণহত্যা, যার বেশিরভাগ শিকার হয় ছাত্র, হিন্দু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগ সমর্থকগোষ্ঠী। এ গণহত্যার কারণ হিসেবে অজুহাত দেখানো হয় মার্চের শুরুর দিকে বাঙালিদের দ্বারা ৩০০ জন বিহারির হত্যাকাণ্ডকে। (জ্বি ভাই, বিহারি হত্যাকাণ্ড একটা ঐতিহাসিক ফ্যাক্ট। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে ইতিহাসকে বিচার করেন।)

অপারেশন সার্চলাইটের আওতায় নিরস্ত্র, গ্রেফতার এবং অনেক ক্ষেত্রে নির্বিচারে হত্যা করা হয় বাঙালি পুলিশ, ইপিআর ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের। পুরো অপারেশনটা ছিল একটা চমকের মত। গুটিকয়েক বাঙালি অফিসার ছাড়া কেউ এমন আক্রমণ প্রত্যাশা করেনি। তাই, পুরোপুরি অপ্রস্তুত অবস্থায় বিব্রত হয়ে পড়ে পুরো জাতি।

পাকিস্তানিদের হিসাব অনুযায়ী, এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব পাকিস্তান "ঠাণ্ডা " হয়ে যাবে। আর ১০ এপ্রিলের মধ্যে পুরো পূর্ব পাকিস্তানে একজন বিদ্রোহীও থাকবে না।

কিন্তু তাদের ভুল প্রমাণ করে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়ে যায় প্রতিরোধ। প্রতিরোধ যুদ্ধ নিয়ে বিস্তারিত বলতে গেলে অনেক দীর্ঘায়িত হয়ে যাবে উত্তর। খালি একটা উদাহরণ দেই প্রতিরোধ যুদ্ধের।

টাইমস সাময়িকী, এপ্রিল ১৯, ১৯৭১

৩১ শের মার্চ ভোর সাড়ে চারটার দিকে কুষ্টিয়াকে মুক্ত করার অভিযান শুরু করে বিদ্রোহীরা। প্রায় ৫ হাজার কৃষক ও পুলিশ সদস্যদের এক বাহিনী এই অভিযানে অংশ নেয়। হাজার কণ্ঠের 'জয় বাংলা' স্লোগানে কেঁপে ওঠে পথঘাট। বিক্ষুদ্ধ বাঙ্গালিদের হাতে ধরা পড়ার আশঙ্কায় পাক সেনাদের মধ্যে দেখা দেয় তীব্র আতংক। ধরা পড়ার পর এক সাক্ষাৎকারে নায়েক সুবেদার মোহাম্মদ আয়ুব বলেন, "আমরা খুবই অবাক হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম বাঙালি সৈন্যদের সংখ্যা হবে আমাদের একটি কোম্পানির মতোই। কিন্তু এখানের প্রত্যেকটা মানুষই যে আমাদের বিরুদ্ধে তা জানতাম না।"

কুষ্টিয়ার পাকিস্তানি ডেল্টা কোম্পানির ১৪৭ জনের মধ্যে কেবল ১৩ জন বেঁচে যায়। কুষ্টিয়ার পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে যশোর থেকে আসা আরেকটি পদাতিক বাহিনী বিশাকালি গ্রামে মুক্তিবাহিনীর ফাঁদে পড়ে ঘটনাস্থলে ৭৩ জন সৈন্য মারা যায়। বাকিদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয়।

মুক্ত কুষ্টিয়ার মাটিতেই ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে।

এই প্রতিরোধ যুদ্ধের হাতিয়ার কী ছিল শুনবেন? কৃষকের কুড়াল, বাঁশের লাঠি ,কিছু এনফিল্ড রাইফেল আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতি তীব্র ঘৃণা। যেই ঘৃণা ছিল সাড়ে সাত কোটি মানুষের সবার মনে।

এরকম সরাসরি যুদ্ধের কথা ভাবতেও পারেনি পাকিস্তান সরকার। তাই, পিআইএর ফ্লাইটে নিয়ে আসা হতে থাকে হাজার হাজার সৈন্য। পুরোদমে বল প্রয়োগ করে বড় শহরগুলো দখল করে ফেলে পাকবাহিনী।

লাখ লাখ বাঙালি পালাতে থাকে নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। ভারত নিপীড়িত এক জনগোষ্ঠীর ভার তুলে নেয় নিজ কাঁধে। বাড়তে বাড়তে এক সময় শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ কোটিতে। ভারতের অর্থনীতিতে প্রচুর চাপ পড়ে গেলেও সাধ্যমতো ব্যবস্থা করে খাদ্য, চিকিৎসা ও মাথা গোঁজার খানিকটা জায়গার।

অন্যদিকে, মুক্তিবাহিনীর বেশিরভাগ ঘাঁটি সরিয়ে নেয়া হয় সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে। ভারতীয় সরকার খুব দ্রুত বাড়িয়ে দেয় সহযোগিতার হাত।

ভারতের অভ্যন্তরে শুরু হয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ। সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ শেষে ভারত থেকে পাওয়া হালকা অস্ত্র হাতে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ঢুকে পড়ত বাংলাদেশের ভেতর।

প্রথমদিকে গেরিলা আক্রমণের মাধ্যমে কালভার্ট, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, রেললাইন ধ্বংস করে পাকিস্তানি সেনাদের রসদ সরবরাহ বাধাগ্রস্থ করাই ছিল অপারেশনগুলোর মূল উদ্দেশ্য।

জুন-জুলাইয়ের দিকে মুক্তিবাহিনী শত্রুসেনাদের কনভয় নিয়মিত আক্রমণ করা শুরু করে। বর্ডার পোস্টগুলোতে একের পর এক হামলা চালায় মুক্তিযোদ্ধারা। কভারিং আর্টিলারি ফায়ার দিয়ে সাহায্য করে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

খোদ ঢাকাতেই খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে গঠিত ক্র্যাক প্লাটুনের মাধ্যমে গেরিলা অপারেশন শুরু হয়।

অক্টোবর-নভেম্বরে মুক্তিবাহিনীর সদস্যসংখ্যা দাঁড়ায় ১৫০০০০ জনে। এসময়টাতে পাকিস্তানি বাহিনী রীতিমতো ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের ভয়ে। (সূত্রঃ উইটনেস টু সারেন্ডার, পাকিস্তানি অফিসার সিদ্দিক সালিক)

নভেম্বরের শেষের দিকের বেশ কিছু যুদ্ধে (যেমনঃ বয়রার যুদ্ধ, হিলির যুদ্ধ, কামালপুরের যুদ্ধ) ভারত সরাসরি অংশগ্রহণ করে। ৩রা ডিসেম্বর পাকিস্তান ভারতে বিমান হামলা চালালে শুরু হয়ে যায় আনুষ্ঠানিক ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ। মাত্র ১৩ দিনের মাথায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে ঢাকার রেসকোর্সে।

এবার আসি প্রশ্নের উত্তরে।

বাংলাদেশ নামের এই ছোট্ট ভূ-খণ্ডটার চারদিকে ভারত নামক এক বিশাল দেশের সীমান্ত। কেবল দক্ষিণ-পূর্বের খানিকটা জায়গায় সামান্য জায়গায় মিয়ানমারের সাথে আমাদের সীমান্ত। আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশি।

এবার খালি ভাবেন যে, ভারত যদি ভিনদেশিদের দ্বারা আক্রান্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করত, তাহলে মুক্তিবাহিনী অস্ত্র পেত কোথায়? পাকিস্তানিদের পাল্টা আক্রমণের শিকার হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পালিয়ে আশ্রয় নিত কোথায়? মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পগুলো কোথায় থাকত? সেগুলোতে ট্রেনিং দিত কারা? (বাঙালি অফিসাররা যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিলেও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্য ছাড়া এত বড় একটা বাহিনী কে প্রশিক্ষণ দেয়া সম্ভব ছিল না)

অতএব, ভারত মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র, গোলাবারুদ সরবরাহ এবং শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদান, বিশ্ব মিডিয়াতে যুদ্ধের প্রচারণা না চালালে বাংলাদেশ যুদ্ধ জিততে পারত না। ভিয়েতনাম যেমন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের অস্ত্র ও রাজনৈতিক সাহায্যে জয়ী হয়েছিল, বাংলাদেশও তেমন ভারতের সরবরাহ করা গোলাবারুদ আর প্রত্যক্ষ সমর্থনে জয়ী হয়েছিল।

তবে এটাও সত্য যে, বাংলাদেশে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন যারা ভারত থেকে অস্ত্র না নিয়ে মাসের পর মাস প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছেন। সর্বহারা পার্টির সিরাজ শিকদার বরিশালের পেয়ারাবাগানে ভারতীয়দের অস্ত্র কিংবা সাহায্য ছাড়াই যুদ্ধ করে মুক্ত রেখেছিলেন পুরোটা সময়ই। সিরাজের বাহিনী পাকিস্তানিদের মেরে অস্ত্র নিয়ে তা দিয়ে যুদ্ধ করত।

রৌমারির সুবেদার আফতাব ভারতের অস্ত্র নিতে অস্বীকার করেন পুরো নয় মাস। পাকিস্তানিদের রসদের উপর হামলা করে অস্ত্র ছিনিয়ে আফতাব বাহিনী যুদ্ধ করে বীরত্বের সাথে।

টাঙ্গাইলের বিখ্যাত বাঘা সিদ্দিকী দেশের মাটির ঘাঁটি থেকেই ৫০০০০ সৈন্যের বাহিনী নিয়ে করেছেন একের পর এক বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধ। ১৬ই ডিসেম্বর কাদেরিয়া বাহিনী বিজয়ীর বেশে ঢাকায় প্রবেশ করে।

কিন্তু……

ভারতীয় সেনাবাহিনী সরাসরি অংশ না নিলে বাংলাদেশ স্বাধীন হত কি?

জ্বি, বাংলাদেশ স্বাধীন হত।

বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের হত্যাকাণ্ড জ্বালিয়ে দিয়েছিল তীব্র ঘৃণা আর প্রতিশোধ স্পৃহা। প্রতিটা মানুষের মধ্যে একটা করে মুক্তিযোদ্ধা লুকিয়েছিল।

অনেকে বলবেন, এসব চেতনার কথা বাদ দেন। বাস্তবে আসেন।

জ্বি, মহাশয়। বাস্তবজ্ঞানেই বলছি। প্রতিকূল পরিবেশে হাজার মাইল দূর থেকে কোনো দেশ দখল করতে গেলে কী হয় জানেন তো? ভিয়েতনাম যুদ্ধে ৫৮০০০ আমেরিকান সৈন্য নিহত হয়েছিল। ভিয়েতনামিদের যত বেশি মারা হত, প্রতিশোধস্পৃহা থেকে আরো বেশি লোক ভিয়েতকংয়ে যোগ দিত।

বাংলাদেশের যুদ্ধে কেবল পাকিস্তানি সৈন্যই নিহত হয় ৬০০০ জন (ভারতীয় হস্তক্ষেপের আগে)।

পাকিস্তানি জেনারেলদের মুখে যুদ্ধের কিছু বয়ান থেকেই বুঝতে পারবেন, নভেম্বরে পাকবাহিনীর কী দশা ছিল! সৈন্যদের মনোবল পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছিল, পাকিস্তানের অর্থনীতি যুদ্ধে খরচ না বইতে পেরে ভিক্ষের দারস্থ হয়।

এই মানুষগুলোর চোখে ক্লান্তি ছিল না, বুকে ডরভয় ছিল না। দিন দিন মুক্তিবাহিনী আরো প্রফেশনাল হচ্ছিল।

অপারেশন কিলোফ্লাইটের আওতায় মুক্তিবাহিনী শুরু করে এক সংগঠিত বিমানবাহিনী গঠনের প্রক্রিয়া। ভারত থেকে পাওয়া যুদ্ধজাহাজ দিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

গেরিলা যুদ্ধ এক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ভিয়েতনাম যুদ্ধে জয়লাভ করতে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ২০ বছরেরও বেশি সময়। বাংলাদেশে অত বেশি সময় না লাগলেও স্বাধীন হতে কম সময় লাগত না। রক্তও ঝরত আরো প্রচুর পরিমাণে।

বিঃদ্রঃ এ প্রশ্নের উত্তরে কিছু মানুষ শ্রীলংকার ৮০০০ সৈন্যের এক বিদ্রোহী বাহিনী, যার কোনো নিজস্ব সরকার নেই, জনগণের সমর্থন নেই, তার সাথে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর তুলনা করছেন। আজ্ঞে, শ্রীলংকার তামিল টাইগারসদের সাথে কারো তুলনা করতে হলে ভারতের উলফা, রাশিয়ার চেচনিয়ার বিদ্রোহীদের সাথে করুন।

বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর তুলনা যদি করতেই হয়, তাহলে ভিয়েতকং, আফগান মুজাহিদ বা মার্শাল টিটোর বাহিনীর সাথে করুন।

বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সামর্থ্য নিয়ে একটু পড়াশোনা করবেন। নেট ঘাঁটলেই পাওয়া যায়।

আর শ্রীলংকার বিচ্ছিনতাবাদী আন্দোলনের সাথে বাংলাদেশের "স্বাধীনতা যুদ্ধের" তুলনা করাটা প্রচণ্ড বোকামি। কেননা বাংলাদেশের পাকবাহিনী সত্যিকার অর্থেই ছিল হাজার মাইল দূরের এক দখলদার বাহিনী।

ধন্যবাদ।

সম্পাদনাঃ কিছু পড়াশোনা করতে পারেন নিচের লিংকগুলোতে-

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক প্রতিরোধ সম্পর্কে পড়ুন- Operation Searchlight - Wikipedia

মুক্তিবাহিনীর আকাশপথের যুদ্ধ নিয়ে পড়ুন- Operation Kilo Flight - Wikipedia

বিখ্যাত অপারেশন জ্যাকপট- Operation Jackpot - Wikipedia

কাদেরিয়া বাহিনীর যুদ্ধ- Kader Bahini - Wikipedia

ঢাকার গেরিলাদের নিয়ে পড়ুন- Crack Platoon - Wikipedia

পড়ার চেয়ে দেখার কাজ অনেক সহজ। একটা ডকুমেন্টারির ভিডিও দিচ্ছি। মানুষগুলোর চোখের ভাষা পড়ে নিজেই বুঝে নিবেন যে মুক্তিযোদ্ধারা কয় বছর যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত ছিল-
বাংলাদেশী যোদ্ধারা ভারতীয়দের অস্ত্র আর সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া কীভাবে যুদ্ধের পরিকল্পনা করেছিল, ভিডিওটাতে দেখবেন। সবার হাতে যেসব অস্ত্র, বেশিরভাগই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী থেকে ছিনিয়ে নেয়া কিংবা লুট করে পাওয়া।

বীর সেনা খালেদ মোশাররফ বলেছিলেন- "কয়েকদিন পর গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে আমরা লাঠি দিয়ে যুদ্ধ করব। তবু দেশকে ছিনিয়ে আনবই।"

পাকবাহিনীর প্রতি কতটা ঘৃণা ছিল এদেশের মানুষের মনে তা চিন্তা করেন। এটা খালি যুদ্ধ ছিল না, একটা বিপ্লব ছিল সাধারণ মানুষের। রাশিয়ান বিপ্লব, চীনা বিপ্লব, ফরাসি বিপ্লব কিংবা আমেরিকার বিপ্লবী স্বাধীনতা যুদ্ধের মতই একটা বিপ্লব, যেখানে বিদেশি শক্তি কিংবা স্বৈরতন্ত্রের নির্মম পতন ঘটেছিল জনগণের ঢেউয়ের সামনে।

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

পরিবার, বন্ধু, কাউকে কিছু না জানিয়ে চট্টোপাধ্যায় (এখন ) পাড়ি দিয়েছিলেন। কিন্তু জাহাজ বর্মার রাজধানী রেঙ্গুনে ঢোকার আগেই তাঁকে যেতে হল ‘কোয়ারান্টিন’-এ। সেই সময় কোনও বন্দরে ব্যাধি দেখা দিলে সেখান থেকে জাহাজ অন্য বন্দরে প্রবেশের আগে জাহাজকে বন্দর থেকে কিছুটা দূরে অন্য এক জায়গায় কয়েক দিন রাখা হত। একেই বলা হয় । রেঙ্গুন তখন প্লেগে ভয়ংকর বিপর্যস্ত। বর্মার সাহেবসুবোরা ধরেই নিয়েছিল, প্লেগ ছড়িয়েছে তৎকালীন বম্বের বন্দরে জাহাজে জাহাজে যে কুলিরা কাজ করে, তাদের থেকে। রেঙ্গুন ঢোকার আগেই আর ডেকের অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে শরৎচন্দ্রও গেলেন আটকে। এক জঙ্গলঘেরা জায়গায় কাটালেন নয় নয় করে সাত দিন।

অবশেষে ঢোকা গেল রেঙ্গুন শহরে। হাত একেবারে খালি। সে সময় রেঙ্গুন শহরে একটিমাত্র হোটেল—‘দাদাঠাকুরের হোটেল’। সেখানে থেকেই শরৎচন্দ্র তাঁর মেসোমশাই অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের জেনে শেষমেশ পৌঁছলেন তাঁর কাছে। অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন রেঙ্গুনের নামকরা উকিল। শরৎচন্দ্র দিন আটকে ছিলেন শুনে মেসোমশাই বললেন, ‘‘তুই আমার নাম করতে পারলি না? আমার নাম করে কত লোক পার হয়ে যায়, আর তুই পড়ে ছিলিস করনটিনে!’’

বর্মি শিখে শরৎচন্দ্র যদি বর্মায় ওকালতি করে তা হলে তাকে আর ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হবে না, এ কথা শরতের মতিলাল চট্টোপাধ্যায়কে অঘোরবাবু আগেই জানিয়েছিলেন। কিন্তু শরতের আর উকিল হওয়া হল না। কারণ, তিনি বর্মি ভাষার পরীক্ষাতেই করতে পারলেন না।

না হয়েও প্রায় তেরো বছর তিন মাস বর্মায় কাটিয়ে ফেললেন শরৎচন্দ্র। ভিক্ষুর বেশে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন উত্তর বর্মার অলিতে-গলিতে। মিশেছিলেন চোর, ডাকাত, খুনি... হাজারও মানুষের সঙ্গে। বিচিত্র সেই সব অভিজ্ঞতা!

বর্মার নানান জায়গায় ঘুরতে ঘুরতে শরৎচন্দ্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল সরকারি কন্ট্রাক্টর গিরীন্দ্রনাথ সরকারের। পেশায় সরকারি চাকুরে, কিন্তু তাঁর নেশা ছিল ভ্রমণ। শরৎচন্দ্র বর্মি ভাষা একেবারেই বুঝতে পারতেন না। গিরীনবাবুই তাঁর দোভাষীর করতেন। এক দিন দু’জনে ঘুরতে বেরিয়েছেন। রাস্তায় দেখলেন, মাছ কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে এক দল বর্মি মেয়ের সঙ্গে কিছু লোকের ঝগড়া হচ্ছে। গিরীনবাবুকে জিজ্ঞেস করে শরৎচন্দ্র জানলেন, বর্মায় মরা মাছের খুব কদর। জ্যান্ত মেরে খাওয়া নাকি ওদের কাছে অধর্ম। ব্যাপারটা জেনে শরৎচন্দ্র বলেছিলেন, ‘‘তা হলে দেখছি একদিন গুচ্ছের মাছ মেরে ওদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হবে।’’ উত্তরে গিরীনবাবু বললেন, ‘‘উহুঁ, ওরা এমনি এমনি নেওয়ার পাত্র নয়, যা নেবে পয়সা দিয়ে নেবে। আর যদি বোঝে মতলব খারাপ, সঙ্গে সঙ্গে ফনানে-ছা। মানে জুতোপেটা!’’

শোনা যায়, প্রণয়ঘটিত ব্যর্থতার যন্ত্রণা ভুলতে প্রথম জীবনে হাতে পেলেই শরৎচন্দ্র বেজায় মদ্যপান করতেন। মাঝে মাঝে মদ খেয়ে বেহুঁশও হয়ে পড়তেন। এক দিন শরৎচন্দ্রের বাড়িতে মদ শেষ। কী করা যায়? গভীর রাতে এক বাঙালি বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে চললেন তাদেরই পরিচিত এক বর্মি বন্ধুর বাড়ি আনতে। বর্মি বন্ধুটির হার্টের অসুখ থাকায় তাঁর মদ খাওয়া নিষেধ ছিল। অনেক অনুরোধের পর বন্ধুর স্ত্রী মদের বোতল বের করে দিলেন। এ দিকে শরৎ ও অন্য বন্ধুদের কী খেয়াল হল, তাঁরা মদ খেতে বসে পড়লেন ওই বর্মি বন্ধুর বাড়ির বারান্দাতেই। মদ খাবে না, এই শর্তে সেও আসরে যোগ দিল। স্ত্রীর নজরদারিতে গোড়ায় মদ না খেলেও, ঘুমিয়ে পড়লে বন্ধুদের অনুরোধে যথারীতি মদের গ্লাসে চুমুকও দিয়ে ফেলল। তার কিছু ক্ষণ পরেই হঠাৎ বুক চেপে ধরে বিকট আর্তনাদ, এবং মৃত্যু!

এর পর শরৎচন্দ্র মদ ছে়ড়ে ধরেছিলেন। যে নেশা তাঁর জীবনের শেষ দিন অবধি ছিল। ভাল গান গাইতেন, শরতের গানে মুগ্ধ হয়ে কবি নবীনচন্দ্র সেন তাঁকে ‘রেঙ্গুন রত্ন’ উপাধি দিয়েছিলেন।

রেঙ্গুনের নাকি শরৎচন্দ্রের যাতায়াত ছিল। এক বার একটি মেয়ের কাছে গিয়ে দেখলেন, তার বসন্ত রোগ হয়েছে। তা দেখে বন্ধুরা সকলে ভয়ে পালিয়ে গেলেও শরৎচন্দ্র কিন্তু পালালেন না। পয়সা করে ডাক্তার ডাকলেন, মেয়েটির চিকিৎসা করলেন। এত কিছু করা সত্ত্বেও মেয়েটি বাঁচল না। শরৎচন্দ্র মেয়েটির সৎকারও করেছিলেন।

রেঙ্গুনে করে থাকতেন লোয়ার পোজনডং-এর এক মিস্ত্রিপল্লিতে। সেখানকার মানুষজনের আপদে-বিপদে সাহায্য করা, অসুখে হোমিয়োপ্যাথি ওষুধ দেওয়া, সব মিলিয়ে শরৎচন্দ্র হয়ে উঠেছিলেন মূর্তিমান মুশকিল আসান। শরৎচন্দ্রের জনপ্রিয়তা দেখে বন্ধু গিরীন মিস্ত্রিপল্লিকে মজা করে বলতেন ‘শরৎপল্লি’।

এই মিস্ত্রিপল্লিতেই এক অসহায় মেয়েকে সাহায্য করতে গিয়ে শরৎচন্দ্র বিপদে পড়েছিলেন। ওই পল্লিতে থাকত এক দম্পতি। বছরখানেক পর মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে যুবকটি তাকে ছেড়ে পালায়। মেয়েটির প্রসব বেদনা উঠলে স্থানীয় লোকজন গেলেন শরৎচন্দ্রের সঙ্গে এ বিষয়ে পরামর্শ করতে। শরৎচন্দ্র সঙ্গে সঙ্গে ডাকলেন। সন্তান প্রসবের পর মেয়েটির দুঃখের কাহিনি শুনলেন ও যুবকটির খোঁজে লোক লাগালেন। খোঁজ পাওয়ার পর শরৎচন্দ্র লোক মারফত যুবকটিকে বলে পাঠালেন, সে যেন তার স্ত্রী ও সন্তানকে গ্রহণ করে। যুবকটি কিন্তু মেয়েটিকে তাঁর স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করল। তারা যে বিবাহিত ছিল না সেটাও জানা গেল। ছেলেটি তখন অন্য এক জায়গায় সংসার পেতেছে।

শুনে বেজায় চটলেন শরৎচন্দ্র। অসহায় মেয়েটিকে বললেন, যুবকের বিরুদ্ধে খোরপোশের করতে। মামলা কোর্টে উঠলে যুবকটি বলল, মেয়েটির সঙ্গে শরৎচন্দ্রের সম্পর্ক আছে। সদ্যোজাত সন্তানটি তার নয়, শরৎচন্দ্রের। আর সন্তান প্রসবের সময় সে কারণেই নাকি শরৎচন্দ্র খরচাপাতি করে ডাক্তার আনিয়েছিলেন। বিচারক সব শুনে ডাক্তারের বয়ান নিলেন। ডাক্তার জানালেন, শরৎচন্দ্র তাঁকে ডাকলেও প্রসবের সময় মেয়েটি তার স্বামীর নাম, মানে ওই যুবকটির নামই করেছিল। যে নাম তার ডায়েরিতে লেখা আছে। বিচারক সিদ্ধান্ত শোনালেন। যুবকটি দিতে বাধ্য হল।

শরৎচন্দ্রের ছিল মাছ ধরার নেশা। বর্মার পেগুতে থাকাকালীন তিনি প্রায়ই যেতেন মাছ ধরতে। এক দিন পুকুরঘাটে গিয়ে দেখলেন, এক সাহেব বেশ তরিবত করে মাছ ধরতে বসেছেন। এ দিকে অল্প সময়ের মধ্যেই শরৎচন্দ্র ধরে ফেললেন একখানা বড় মাছ। তা দেখে ওই সাহেব স্পষ্ট বাংলায় শরৎচন্দ্রের মাছ ধরার করে নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করতে লাগলেন। সুদূর পেগুতে সাহেবের মুখে বাংলা শুনে শরৎচন্দ্র তো অবাক। পরে জেনেছিলেন, সাহেব অনেক দিন কলকাতায় ছিলেন, সেখানেই বাংলা শেখেন। কথায় কথায় সাহেব জানালেন, আজ মাছ নিয়ে বাড়ি না ঢুকলে মেমসাহেব তাঁকে আস্ত রাখবেন না। কারণ, প্রচুর টাকা খরচ করে তিনি রেঙ্গুন থেকে পেগু এসেছেন স্রেফ মাছ ধরার নেশায়। এখন যদি একটাও মাছ নিয়ে যেতে না পারেন, তা হলে লজ্জার কথা। সব শুনে শরৎচন্দ্র হেসে বললেন, ‘‘আপনি কিছু মনে করবেন না, আমার মাছটি নিয়ে যান।’’

পেগুর শিকারি মিস্টার প্যাখামের সঙ্গে শরৎচন্দ্র মাঝে মাঝেই শিকারে বের হতেন। এক বার সবাই শিকারের আশায় ঝোপের মধ্যে অপেক্ষা করছেন। এমন সময় হঠাৎ গুড়ুম শব্দ। দেখা গেল, শরৎচন্দ্র একটা চিল শিকার করে ফিরছেন। সবাই অবাক। শরৎচন্দ্র বললেন, ‘‘ঝোপের মধ্যে জড়ভরতের মত বসেছিলাম। একদল বককে দেখে গুলি ছুঁড়লাম। মরল চিল।’’ তার পর মৃত চিলের ডানা ধরে দেখিয়ে সবাইকে বললেন, ‘‘দেখো। চিলের গায়ে কোথাও গুলি লাগেনি, এ তো গুলির শব্দে হার্টফেল করেছে।’’

রেঙ্গুনের বাড়িতে ছিল তাঁর নিজস্ব একটি লাইব্রেরি। কাঠের এই বাড়িটি তিনি কিনেছিলেন এক ইউরোপীয় সাহেবের কাছ থেকে। এক বার লাগল সেই বাড়িতে। পুড়ে ছাই হয়ে গেল সব কিছু। তার মধ্যেই ছিল ‘’ উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি এবং তাঁর নিজের আঁকা বেশ কিছু পেন্টিংও। সব খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে শরৎচন্দ্র পথে এসে দাঁড়ালেন, কুকুর ‘ভেলি’ আর পোষা কাকাতুয়া ‘বাটুবাবু’র সঙ্গে।

আক্রান্ত হলেন রোগে। হাত-পা ফুলে যাচ্ছে, । অবস্থা এমন, প্রায়-পঙ্গু পা নিয়ে চলাফেরাই করতে পারেন না। ডাক্তার জানালেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের কারণেই এই দশা, বর্মা ছাড়লে তবেই এ রোগ সারবে। এ দিকে চিকিৎসার জন্য ছুটি চাওয়া নিয়ে বড়সাহেবের সঙ্গে বচসা বাধল। শরৎচন্দ্র খুব হয়ে তেড়ে গেলেন সাহেবের দিকে। বাঙালি কেরানির ঔদ্ধত্য দেখে সাহেব স্তম্ভিত!

সে দিনই কাজে ইস্তফা দিলেন শরৎচন্দ্র। ফিরলেন দেশে। দেশে ফিরে চেহারায় বদল আনলেন। রেঙ্গুনে থাকার সময় দাড়ি রেখেছিলেন। ঘন ঘন সিগারেট খেতেন। খেলতেন । জীবনচর্চায় ছিল ফরাসি বোহেমিয়ানিজমের প্রভাব। তখন তাঁর গুরু এমিল জোলা। বর্মা থেকে ফেরার কয়েক বছর পর -গোঁফ কামিয়ে ফেললেন। শুরু হল আর এক নতুন জীবন।

তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

"আলজেরিয়ায় একটি বিখ্যাত মসজিদ আছে, গ্র্যান্ড মসজিদ। ১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় পাঁচ দিনের জোট নিরপেক্ষ (ন্যাম) সম্মেলনে গিয়ে মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সৌদি আরবের বাদশা ফয়সলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুও দলবেঁধে ওই গ্র্যান্ড মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেন। আর কোন মুসলিম রাষ্ট্রনায়ক যেতেন না। এটি জানতে পেরে আলজেরিয়ার এক সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি তো সেক্যুলার, তাহলে নামাজ পড়েন কেন?’ এর জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ইন মাই পারসোনাল লাইফ, আই এম এ ট্রু মুসলিম। বাট ইন মাই পলিটিক্যাল লাইফ, আই এম সেক্যুলার। ’ বঙ্গবন্ধুর এ বক্তব্য সে সময় আলজেরিয়ায় আলোড়ন তোলে।"

-প্রয়াত আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী

@bengali_convo
@masindia
নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

বাংলাদেশের ৯-মাসের গণহত্যা বনাম ক্যাম্বোডিয়ার ৩ বছর ৮ মাসের গণহত্যা

ক্যাম্বোডিয়ার গনহত্যাঃ

যা কিনা ৩ বছর ৮ মাস ২০ দিন ধরে চলেছে
যেখানে ১৫—২০ লক্ষ লোক হত্যা করা হয়েছে বলে ধরা হয়
যা কিনা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত
তার চেহারা এরকম.....

See the pictures below..

বাংলাদেশের গনহত্যাঃ

আওয়ামী লীগার এবং চ্যাতোনাবাদীদের বক্তব্য অনুসারে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের তথাকথিত "মুক্তিযুদ্ধ"-এর সময় ৯ মাসে ৩০ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

তো, তাদের দাবীকৃত গনহত্যার চেহারা হচ্ছে এরকম …

See the pictures below..

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

"বাংলাদেশের ৩০ লক্ষ লোক হয়েছেন" এটার রেফারেন্স কী?
এটি একটি প্রোপাগান্ডা। ৩০ লক্ষের কোন ভিত্তি নেই।
পূর্বদেশ পত্রিকার ২১ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে সর্ব প্রথম এই খবর প্রকাশ হয়।

পূর্বদেশ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন মাহবুবুল হক এবং ছিলেন শামসুল ইসলাম। এটি আল-হেলাল প্রিন্টিং এন্ড পাব্লিশিং থেকে প্রকাশ হতো।
এর ঠিক ৩ দিন পরে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাভদা সংস্থা এই একই খবর প্রকাশ করে। সুত্র হিসাবে উল্লেখ করা হয় "বিশেষ "।

এর পরে ENA (Eastern news agency) নামে একটি সংবাদ সংস্থা আবার প্রাভদা থেকে টুকলিফাই করে ।

Reference: sanipanhwar.com/Behind%20The%2

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া একজন প্রেসিডেন্টের নাম

"জিয়াউর রহমানের পাঁচ বছরের প্রতি মাঘের শেষে বর্ষন হয়েছিল কিনা তা কেউ হিসাব রাখেনি, তবে এই পাঁচ বছরে কোনো দুর্যোগ হয়নি । অতি বর্ষনের বন্যা না, খরা না, জলোচ্ছাস না। দেশে কাপড়ের কিছুটা দূর হলো। দ্রব্যমূল্য লাগামছাড়া হলো না। নদীতে প্রচুর মাছ ধরা পড়তে লাগলো।

বাংলাদেশের মানুষ মনে করতে লাগলো অনেক দিন পর তারা এমন এক পেয়েছে যিনি সত্‍। নিজের জন্য বা নিজের আত্নীয়স্বজনের জন্য টাকা পয়সা লুটপাটের তার মাথায় নেই। বরং তার মাথায় আছে দেশের জন্য চিন্তা। তিনি কেটে বদলাতে চান। জিয়া মানুষটা ‍ ছিলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। লোক দেখানো সত্‍ না, আসলেই সত্‍। তার মৃত্যুর পর দেখা গেল পরিবারের কোনো সঞ্চয় নেই।"

Reference:

(দেয়াল, পৃষ্ঠা-১৯৩)

সামনে থেকে দেওয়া একজন প্রেসিডেন্টের নাম জিয়াউর রহমান।

@bengali_convo

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

একটা সোনার দেশকে মৃতপুরি বানালো যে ব্রিটেন, উপনিবেশবাদ, তারই প্রতিকী চিহ্ন বহন করতেন রানী দ্বিতীয়

১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় শেষ সময়ের দিকে যে দুর্ভিক্ষ হয় তাতে বাংলার ৩০ লক্ষ লোক না খেয়ে মারা যায়। এই দুর্ভিক্ষ কিন্তু কম হয়েছিল সে কারণে না,বরং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাংলা থেকে সব খাদ্য ব্রিটেনে নিয়ে করা হচ্ছিল।

১৭৫৭ সালে অপরিনামদর্শী সিরাজউদ্দৌলার পতনের আগ পর্যন্ত সুবা বাংলা ছিল গোটা দুনিয়ার মধ্যে ঐশ্বর্যশালী একটি দেশ। তখনকার অনেক ইউরোপিয়রা বলেছেন, বাংলার মানুষের প্লেটে কম করেও তিন ধরনের পদ বা থাকত। , খাওয়া তাদের জন্য সাধারণ বিষয় ছিল। তাদের গায়ে যে পোষাক ছিল তা ইউরোপিয়ানদের কাছে ভাবনারও অতীত। বাংলার পন্য নিয়ে বাংলার বণিকরা তখন পূর্বদেশ মানে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত পৌছে যেতো।

নবাবের পতনের পর তিন নতুন নবাব প্রতিস্থাপনের পর মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে কোম্পানি বাংলা, বিহার ও ওড়িশার খাজনা উঠানোর বিষয়টি মাত্র লাখ দেড়েক রূপিতে কিনে নেন রবার্ট ক্লাইভ। এরপর রবার্ট ক্লাইভ হিসাব করে দেখান, দেড় লাখ রূপি দেবার পরও কোম্পানির প্রায় ১৬ লাখ রূপি। বাস্তবে সেটি কোটি রূপিতে ছাড়িয়ে যায়।

তো, এরপর থেকে ফসলে, পন্য উদ্বৃত্ত একটি জনপদ রাতারাতি শশ্মান হয়ে যায়। সব থেকে বেশি সংকটে পড়ে ঢাকা। একটা বাণিজ্যিক শহর পরিণত হয় ব্রিটিশ অত্যাচারে। কোম্পানির হাতে রাজস্ব উত্তোলনের দায়িত্ব থাকায় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত রাজস্ব উত্তোলন শুরু হয়। বাংলা ১১৭৬ সাল আর ১৭৭০ ইংরেজি। সিরাজের পতনের মাত্র ১৩ বছরের মাথায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা যায়। সোনার বাংলা গোরস্থানে পরিণত হয়। এই দুর্ভিক্ষে ১ কোটি লোক মারা যায়। এটা দুনিয়ার নিকৃষ্টতম দুর্ভিক্ষ। দুর্ভিক্ষের কারণ ফসল উৎপাদন কম নয়, দুর্ভিক্ষের কারণ সে বছর মাত্রাতিরিক্ত খাজনা আদায়। যে বছর দুর্ভিক্ষ হলো তার আগের বছর আদায়কৃত রাজস্ব ছিল দেড় কোটি । আর যে বছর দুর্ভিক্ষ হলো সে বছর আগের বছরের তুলনায় ৫ লাখ ২২ হাজার রূপি বেশি আদায় হয়েছিল।

ঢাকার মসলিনের কদর ছিল ছোঁয়া। ব্রিটেন থেকে কোম্পানি কলের তৈরি কাপড় আনলেও সেটা এখানে চলত না। তারপর তারা আমাদের তাঁতীতের হাতের আঙ্গুল পর্যন্ত কেটে দেয় যাতে তারা বুনতে না পারে।

গোটা মুঘল আমলে সুবা বাংলা ১৯টি, পরে ৩৪টি ছোট ছোট নবাব ও রাজাদের অধীনে হয়েছে। সেই শাসনের বেশিরভাগ সময় মুঘল শাসনের বিষয়টি অনেক আলগা ছিল। বাংলা মুঘল শাসনের অধীনে ছিল ২৩০ বছর। এই ২৩০ বছরে বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়নি। ১৭৬৪ সালে বক্সারের মীর কাশিম হেরে যাবার পর দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলা, বিহার ও ওড়িশার দেওয়ানী কিনে নেয় কোম্পানি। এরপর মাত্র ৬ বছরের মাথায় ১৭৭০ সালে বা বাংলা ১১৭৬ সনে দুর্ভিক্ষ হয় যাতে মারা যায় ১ কোটি মানুষ। এটা নির্মম, ভয়াবহ উপনিবেশিক শোষনের ফল।

কোম্পানির শাসন ও ব্রিটেনের শাসনের মধ্যে কত লোককে তারা জোরপূর্ব দাস বানিয়েছে সেই হিসাব নতুন করে আমাদের নেয়া দরকার।

১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ সময়ের দিকে যে দুর্ভিক্ষ হয় তাতে বাংলার ৩০ লক্ষ লোক না খেয়ে মারা যায়। এই কিন্তু ফসল উৎপাদন কম হয়েছিল সে কারণে না,বরং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাংলা থেকে সব ব্রিটেনে নিয়ে মজুদ করা হচ্ছিল। যুদ্ধে যেখানে মাত্র ৪০ হাজার ব্রিটিশ সৈন্য লড়ছিল সেখানে ভারতীয় সৈন্য ছিল প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার। ভারতীয়রা মরেছেও যুদ্ধের ময়দানে অকাতরে।

দুর্ভিক্ষের অশনি সংকেত বেজে উঠার আগে বিষয়টি তৎকালীন চার্চিলকে জানানো হয়েছিল, তখন রাজা ছিলেন ষষ্ট , মানে দ্বিতীয় এলিজাবেথের বাবা। চার্চিল নিকৃষ্ট উত্তর দিয়েছিল।

একটা দেশকে বানালো যে ব্রিটেন, ব্রিটেন উপনিবেশবাদ, তারই প্রতিকী চিহ্ন বহন করতেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ।

দ্বিতীয় এলিজাবেথ মারা গেছেন। পরিণত বয়সেই মারা গেছেন। যে কোনো মৃত্যুই বেদনাদায়ক। কিন্তু রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে পূর্ববঙ্গের মানুষের শোকটা তার রক্তের সাথে বেঈমানি। বাহাদুর নামে ঢাকায় একটা পার্ক আছে। ওখানে ১৮৫৭ সালে ভারতের প্রথম স্বাধীনতাকার্মী বিপ্লবীদের লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।সিরাজউদ্দৌলার লাশ শহরে টেনে হিঁচড়ে নেয়া হয়েছিল।

আমি ইতিহাসের ছাত্র। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ডকুমেন্ট নাড়াচাড়া করলে অপ্রকৃস্থ হয়ে যাই। ব্রিটিশ শোষণ থেকে মুক্তির জন্য অকাতরে জীবন দিয়েছেন । সেই বিপ্লবীদের বড় অংশ বাংলাদেশের। আমাদের পূর্বপুরুষ তাদের রেখে,ভয়াবহ ইন্টারোগেশনের সামনে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে। আর আমরা আজ সেই ঔপনিবেশিক শোষনের চিহ্নের জন্য কাঁদছি। কী ! কি

আন্দামানের জেলগুলোতে থাকা আমাদের বিপ্লবীদের দীর্ঘশ্বাস বাংলাদেশের আকাশে মেঘ হয়ে আসুক।
(সংগৃহীত)

@bengali_convo

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

একদল যাত্রী হজ্জে যাচ্ছেন, ১৯৩৪ সাল। - - - - হয়ে এরা মক্কা যেত। যখন যে দেশে দলটি পৌঁছাত তখন সে দেশের লোকেরা যোগ দিত।

@bengali_convo
@masindia
নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

Show older
Qoto Mastodon

QOTO: Question Others to Teach Ourselves
An inclusive, Academic Freedom, instance
All cultures welcome.
Hate speech and harassment strictly forbidden.